--> ইসলাম,ঈমান,ইহসান,ও কিয়ামত কাকে বলে? - islamic guide -->

ইসলাম,ঈমান,ইহসান,ও কিয়ামত কাকে বলে?

ইসলাম,ঈমান,ইহসান,ও কিয়ামত কাকে বলে?



ইসলাম,ঈমান,ইহসান,ও কিয়ামত কাকে বলে ?

عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه: قال بينما نحن عند رسول الله صلى الله عليه وسلم: ذات يوم اذ طلع علينا رجل شديد بياض الثياب شديد سواد الشعر الخ



হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিকট উপস্থিত ছিলাম এমন সময় হঠাৎ ধবধবে সাদা কাপড় পোশাক পরিহিত এবং কুচকুচে মিশকালো চুল বিশিষ্ট একজন অকান্ত লোক এসে আমাদের নিকট উপস্থিত হল দূর দেশ হতে সফর করে আশা কোন চিহ্ন তার ওপর দেখা যাচ্ছে না অথচ আমাদের কেউই তাকে চিনতেও পারছেনা ।

অবশেষে লোকটি নবী করিম সাঃ এর খুব কাছে এসে বসলো এবং হুজুর সাঃ এর হাঁটুদ্বয়ের সাথে তাঁর হাঁটুদ্বয় মিলিয়ে নিজের হস্তদ্বয় তাঁর উরুর (রানের) উপর রাখল ।

অতঃপর বলল, হে মুহাম্মদ (সাঃ)!  

আমাকে বলুন, ইসলাম কি? অর্থাৎ ইসলাম কাকে বলে?  উত্তের হুজুর সাল্লালাহু আলাই সালাম বললেন, 
যে সকল বিষয়কে ইসলাম বলা হয় তা হলো ,তুমি মুখে ও অন্তরে
সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন "ইলাহ" (উপাস্য) নেই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আল্লাহর রাসূল নামাজ কায়েম করবে। বৎসরান্তে যাকাত আদায় করবেন, রমজান মাসে রোজা রাখবে এবং সামর্থ্য থাকলে আল্লাহর ঘরে হজ করবে । হুজুরের জবাব শুনে আগান্তুক প্রশ্নকারী বলে উঠল, আপনি ঠিকই বলেছেন। বর্ণনাকারী হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, নবাগত ব্যক্তিকে অজ্ঞের মতো প্রশ্ন করতে এবং তার উত্তর কে বিজ্ঞেন মতো সত্য ও সঠিক ঘোষণা করতে দেখে আমরা অত্যন্ত বিস্মিত হলাম। বর্ণনাকারী বললেন অতঃপর সে জিজ্ঞাসা করলেন আচ্ছা এবার বলুন "ঈমান" কাকে বলে ? 
উত্তরের রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বললেন, ঈমান হলো এই যে, তুমি আল্লাহকে, তার ফেরেশতাকুল কে, তার কিতাব সমূহকে, তার সমস্ত পয়গম্বরদের কে, এবং পরকালকে, সত্য বলে মনে প্রাণে মেনে নেবে। আর প্রত্যেক ভালো-মন্দ সম্পর্কে আল্লাহর নির্ধারণ অর্থাৎ তাকদীরকে সত্য বলে বিশ্বাস স্থাপন করতে মেনে চলবে। (উত্তর শুনে) লোকটি বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন। এবার সে জিজ্ঞাসা করল আমাকে "ইহসান" সম্পর্কে অবহিত করুন আর যদি তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছেন ।এবার সে জিজ্ঞাসা করল আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন, উত্তরা সালাম বললেন তা হল তুমি এমন ভাবে (কায়মন চিত্তে) আল্লাহর বন্দেগি করবে যেন তুমি তাঁক চাক্ষুষ দেখছো। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তাহলে অন্তত এ আকীদা পোষণ করবে যে, তিনি অবশ্যই আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। এবার সে জিজ্ঞেস করল আমাকে "কিয়ামত" সম্পর্কে অবহিত করুন, অর্থাৎ কিয়ামত কখন হবে? 

উত্তরে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন, তারা যার নিকট এ প্রশ্ন করা হয়েছে সে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্নকারী হতে অধিক জ্ঞাত নয়। অর্থাৎ এ সম্পর্কে আমি আপনার থেকে অধিক কিছু জানি না অথঃপর লোকটি বলল, 
আচ্ছা আপনি আমাকে তার নিদর্শন সমূহ বলে দিন।
 
উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বললেন 
তার একটি হল দাসী স্বীয় প্রভু বা মালিককে প্রসব করবে।

দ্বিতীয় নিদর্শন হল তুমি দেখতে পাবে এক কালে যাদের পায়ে জুতা ও গায়ে কাপড় নেই, রিক্তহস্ত ও মেঘ চালক পরবর্তীকালে তারা বড় বড় প্রাসাদ ও সূ উচ্চ র্অট্টালিকা নির্মাণ করে পরস্পরের গর্ভ অহংকার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হবে। বর্ণনাকারী হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, এসব কথোপকথন হওয়ার পর নবাগত লোকটি বলে চলে গেল। কিন্তু আমি কিছুক্ষণ সেখানে অতিবাহিত করলাম। 
আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে ওমর! তুমি কি জান!  প্রশ্নকারী লোকটি কে ছিল? আমি বললাম না হুজুর! 
আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। 
উত্তরের নবী করীম (সাঃ) বলেন তিনি হলেন হযরত জিবরাঈল (আঃ)। তিনি তোমাদেরকে দিন (ইসলাম) শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তোমাদের কাছে এসেছিলেন ।





بينما نحن الخ: অর্থাৎ হযরত ওমর (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীসে তিনি হযরত জিবরাঈল (আঃ) কিভাবে রাসুল সালাম সালামের খেদমতে এসে বসেছেন এবং দীনের কি কি মৌলিক বিষয়াবলী তথা ইসলাম,ঈমান,ইহসান ও কিয়ামত সম্পর্কীয় আকিদা ও উহার বিশেষ নিদর্শন সম্পর্কে যেই আলোচনা করেছেন। ইত্যাদি উল্লেখ করেন। এতে একজন ছাত্র কিভাবে তাদের ওস্তাদের নিকট বসেতে হয় এবং কোন রীতিনীতিতে জিজ্ঞেস করতে হয়, 
তা প্রমাণিত হলো এবং আরো সাব্যস্ত হলো যে,  দীনের মৌলিক বিষয়গুলো সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি কি? আর কিয়ামতের সঠিক সময় সম্পর্কে আমাদের কোন অভিজ্ঞতা থাকতে পারে না। আর রাসূল (সাঃ) বর্ণিত নিদর্শনা গুলো কিয়ামতের নিদর্শন সুতরাং আমাদের বাস্তব জীবনেও আমাদের কারো নিকট দ্বীন শিক্ষার জন্য এ পদ্ধতি বুঝতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কথা ও নিয়ম জিজ্ঞেস করতে হবে আর আমাদের প্রতিটি মুসলমানের জীবন ইসলাম ঈমান এহসান ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলো বর্ণিত বিশ্লেষণ অনুসারে বাস্তবায়ন করতে হবে আর কি আমার সম্পর্কে বিশ্বাস রাখতে হবে যে তার সঠিক সময় একমাত্র আল্লাহই জানেন এবং বর্ণিত নিদর্শনা গুলো কিয়ামতের আলামত ও নিদর্শন বলে আকিদা রাখতে হবে।