--> রোজা ও তার প্রকারভেদ প্রসঙ্গে - islamic guide -->

রোজা ও তার প্রকারভেদ প্রসঙ্গে

রমজানের সময় সূচি ২০২৩ রমজানের ক্যালেন্ডার রোজার নিয়ত রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি রমজানের রোজা কখন ফরজ হয় রমজানের রোজা কার উপর ফরজ
রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি

হাদীস শরীফঃ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ফরমায়েছেন, বনে আদমের সকল আমলের সওয়াব ১০ গুন থেকে ৭০০ গুন পর্যন্ত দেওয়া হবে । আল্লাহ তা'আলা বলেন তবে রোজা এর ব্যতিক্রম । নিশ্চয়ই রোজা আমার জন্য আর আমি নিজেই রোজার প্রতিদান হবো ।

       

                                 ( বুখারী ও মুসলিম শরীফ )



 আল কোরআনঃ

হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হল, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার। 

                                        (আল-বাকারাহ্ঃ ১৮৩)

 রোযার নিয়তঃ

ছুবহে ছাদিকের পূর্বে/আনুমানিক সকাল ১১ টার পূর্বে মনে মনে বলবে: আমি আজ রোযা রাখার নিয়ত করিলাম।


১. ইফতারের পূর্বে পড়বে-

يَاوَاسِعَ الْمَغْفِرَةِ اغْفِرْلِ

ইয়াওয়াসিআ—ল মাগফিরাতি ইগফিরলী। 

২. ইফতারের শুরুতে পড়বে।

بسْمِ اللهِ وَبَرَكَةِ اللهِ

বিসমিল্লাহি ওয়াবারকাতিল্লাহ্


ইফতারের পর দুটি দু'আ।

اللهم لك صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ. 

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোযা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করলাম ।

                          (আবূ দাউদ ১/৩২২)


ذَهَبَ الظُّمَةُ وابْتَلت العُرُوقُ وثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ 

অর্থ: পিপাসা দূরীভূত হয়েছে, ধমনীসমূহ সতেজ হয়েে এবং ইনশাআল্লাহ্ রোযার সওয়াব নিশ্চিত হয়েছে।

                            (আবূ দাউদ ১/৩২১)

রমজানের সময় সূচি ২০২৩




রোজার সংজ্ঞাঃ
দিনের বেলায় ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে পেটে বা শরীরে যে অংশ পেটের হুকুমের অন্তর্ভুক্ত তাতে কোন জিনিস প্রবেশ করানো থেকে এবং যৌনাঙ্গের চাহিদা মেটানোর থেকে রোজার নিয়তে এমন ব্যক্তি বিরত থাকা যার উপর রোজা ফরজ হয়েছে তাকে রোজা বলা হয়।

"জাহান্নাম থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য 
            মানুষের সবথেকে বড় ঢাল হলো রোজা।"
                     ""(আল হাদিস)""

(রমজানের রোজা ওয়াজিব তথা ফরজ হওয়ার কারণঃ)

রমজানে রোজা ওয়াজিব হওয়ার কারণ হলো রমজানের কিছু অংশ পাওয়া এবং রমজানের প্রতিদিনই উক্ত দিনে রোজা ওয়াজিব হওয়ার কারণ। যে ব্যক্তির মধ্যে চারটি বিষয়ে একত্রিত হয় তার উপর রমজান রোজা নির্দেশিত সময়ে আদায় করা আর যথা সময়ে আদায় করতে না পারলে তার কাজা আদায় করতে হয় সেই বিষয়গুলো হলো।

রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টিঃ

১. মুসলিম হওয়া ২. জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া ৩. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া ৪. যে ব্যক্তি অমুসলিম দেশে ইসলাম গ্রহণ করেছে। তার রোজা ওয়াজিব হওয়ার জ্ঞান থাকা, অথবা মুসলিম দেশে অধিবাসী হওয়া।

রোজা আদায় ওয়াজিব হওয়ার শর্ত সমূহঃ

(রোজা আদায়ের অন্তরায় এমন) রোগমুক্ত হওয়া, মহিলা গণ হায়াজ ও নেফাজ থেকে মুক্ত হওয়া, মুকিম হওয়া।

রোজা আদায় বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত তিনটি

১. নিয়ত করা ২. রোজা আদায়ের অন্তরায় জিনিসসমূহ অর্থাৎ হায়াজ নেফাজ থেকে মুক্ত হওয়া। ৩ রোজা নষ্টকারী যিনি সমূহ থেকে মুক্ত হওয়া। তবে জানাবাত থেকে মুক্ত  হওয়ার শর্ত নয়।

রোজার রোকনঃ 

পেট ও যৌনাঙ্গের চাহিদা এবং এতদুভয় সংক্রান্ত বিষয় সংক্রান্ত বিষয় সমূহ থেকে বিরত থাকা।

রোজার হুকুমঃ

যিম্বা থেকে ওয়াজিব রহিত হওয়া এবং আখেরাতের সওয়াবের অধিকারী হওয়া। 

অনুচ্ছেদঃ

রোজা ৬ প্রকার। যথাঃ 

 ১. ফরজ, ২. ওয়াজিব, ৩. সুন্নাত, ৪. মুস্তাহাব, ৫. নফল, ৬. মাকরূহ।

ফরজ রোজাঃ
রমজানের রোজা আদায় হোক অথবা কাযা হোক। কাফফারার রোজা, মান্নতের রোজা; জাহিরী রেওয়ায়েত মতে। 

ওয়াজিব রোজাঃ

 যে নফর রোজা ভেঙ্গে ফেলা হয় তার কাযা। 

সুন্নাত রোজাঃ

 ৯ তারিখে রোজাসহ মহররমের ১০ তারিখের রোজা।

মুস্তাহাব রোজাঃ 

প্রত্যক মাসের দিন রোজা রাখা এবং তিন দিন আইয়্যামে বীজে হওয়া মুস্তাহাব। আইয়ামে বীজ হলো (আরবী মাসের) ১৩.১৪.১৫. তারিখ সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা। শাওয়ালের ৬ রোজা। এ রোজাগুলো সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন, একসঙ্গে ছয়টি রাখা উত্তম আবার কেউ কেউ বলেন পৃথক পৃথক রাখা উত্তম যে সব রোজা রাখার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর হাদিস দ্বারা উৎসাহ প্রদান ও সওয়াবের ওয়াদা প্রমাণিত। যেমন সাওমে দাউদ (দাউদ আঃ এর মতো রোজা) রাখা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন একদিন রাখতেন না এটি সর্বোত্তম আল্লাহ তা'য়ালা নিকট সবচেয়ে প্রিয়

নফল রোজাঃ

উপরে বর্ণিত রোজাগুলো ছাড়া অন্য সব রোজা যা মাকরূহ হিসেবে প্রমাণিত নয়। 

মাকরুহ রোজাঃ

 দু ভাগে বিভক্ত। 
যথা এক মাকরূহে তানজিহি দুই মাকরূহে তাহরীমী।

 মাকরুহের তানজিহিঃ

যেমন মহররমের তারিখের রোজা ছাড়া কেবল ১০ তারিখে রোজা রাখা।

 মাকরূহে তাহরিমীঃ

যেমন ঈদের দিন এবং আইয়ামে তাশরিকের রোজা রাখা শুধু শুক্রবারে পৃথকভাবে কিংবা শুধু শনিবারে পৃথকভাবে রোজা রাখা মাকরূহ। তবে যদি তার নিয়ম মাফিক রোজা এ দিনগুলোর সাথে মিলে যায় তাতে কোন অসুবিধা নেই সাওমে রেসাল রাখা মাকরুহ যদি ও দুদিনের জন্য হয়। শাওমের এসাল হলো এভাবে রোজা রাখা যে সূর্যাস্তের পরও ইফতার না করা। ফলে পূর্বদিনের রোজা পরবর্তী দিনের সঙ্গে মিলে যায় রোজা রাখা মাকরূহ। 

অনুচ্ছেদঃ

রাতে যে সব রোজার নিয়ত করা এবং রাতে নিয়ত নির্ধারণ করার শর্ত নয়। সেগুলো হল রমজানের রোজা এবং এমন নির্ধারিত মান্নতের রোজা যার দিন তারিখ ও সময় নির্ধারিত এবং নফল রোজা বিশুদ্ধ মতে এই তিন প্রকার রোজা রাত থেকে অর্ধ দিন পর্যন্ত যেকোনো সময় নিয়ত করলে রোজা রাখা শুদ্ধ হয়। ফজরের (সুবহে সাদিকের) শুরু থেকে পূর্বান্য পর্যন্ত। বিশুদ্ধ মতে (উপরিউক্ত তিন প্রকারের রোজায়) কেবল রোজার ইচ্ছা করলে অথবা শুধু নফল রোজার ইচ্ছা করলেই শুদ্ধ হয়ে যায়। যদিও সে মুসাফির বা রোগী হয়।